প্রকাশিত: ২৩/১১/২০১৬ ৭:৩২ এএম

শামীম ইকবাল চৌধুরী,নাইক্ষ্যংছড়ি::

রামুর ঐতিহ্যবাহী গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে তখনই শুরু হয়েছে রশি টানাটানি। আর এ নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দুর্ভোগ পোহাবে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। বিষয়টা দু:খজনকও বলছেন সচেতন মহল। তাঁদের দাবি, যারা রশি টানাটানি নিয়ে ব্যস্থ তাঁরা বড় স্বার্থটাকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ক্ষুদ্র স্বার্থকেই দেখছেন।

সূত্র জানায়-পার্বত্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় গিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া কষ্টকর বিদায়, গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য পাশ্ববর্তী কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গত ২৬ আগস্ট সম্মতি/অনাপত্তিপত্র দেন। পরে গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে সদ্য বিদায়ী রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিনা কাজী সম্মতি দিয়ে আবেদনপত্রটি জেলা প্রশাসক বরাবরে পাঠান। এর পর ১০ নভে ম্বর রামু-কক্সবাজার আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমলও এ বিষয়ে জোর সম্মতি প্রদান করেন। এ খবর প্রকাশ পাওয়ার পর উল্টো কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ব্যার্থ চেষ্টা শুরু করেন অত্র বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও কচ্ছপিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন। এরই ধারাবাহিতকায় ১৫ নভেম্বর ওই সাবেক চেয়ারম্যান এমপি সাইমুম সরওয়ার কমলের সম্মতিপত্রও আদায় করে নেন! মূলত তাঁর কারনেই এখন গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ফাইলটি লাল পিতায় বন্দি আছে। পূরণ হচ্ছে না বৃহত্তর গর্জনিয়াবাসীর প্রাণের দাবি। যদিওবা এখন চাপের মূখে পড়ে সম্মতি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করছেন কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিল কান্তি শর্মা।

গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ.এইচ.এম মনিরুল ইসলাম বলেন-প্রতিষ্ঠাকাল, একাডেমিক ভবন, শিক্ষার্থী, মনমোগ্ধকর পরিবেশ, সীমানা প্রাচীর ও বিশালকার খেলার মাঠসহ সব দিকে কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের চেয়ে এই বিদ্যালয় অনেক এগিয়ে। কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের দেড় শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীও আমাদের শিক্ষার্থী। এ কারনে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমলের প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালে জেএসসি কেন্দ্র অনুমোদন দেয় চট্টগ্রাম মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। ওই সময়েও একইভাবে তাঁরা রশি টানাটানি করেছিলেন। কিন্তু পরে ব্যার্থ হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের বর্তমান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোঃ মাহবুবু হাসান, শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক সুমন বড়–য়া, বিদ্যালয় পরিদর্শক নাজিমুল ইসলাম ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে সীমানা প্রাচীর, খেলার মাঠ ও মনমুগ্ধকর পরিবেশ দেখে খুবই সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। এবং তাঁরা বলেছিলেন এই বিদ্যালয়ে অবশ্যই এসএসসি কেন্দ্র স্থাপন করা সম্ভব। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে গত বছর আমাদের বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের বিদ্যালয় থেকে অংশ নিয়েছে মাত্র ৩১ জন। আগামী এসএসসি পরীক্ষাও তাঁদের চেয়ে আমাদের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের শিক্ষানুরাগী সদস্য হাবিব উল্লাহ চৌধুরী বলেন-স্কুল পর্যায়ে কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের চেয়ে গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা পর্যায়ে গর্জনিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার চেয়ে কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের গর্জনিয়া ফয়জুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা সিনিয়র। এই বিষয়টা সবারই জানা। সেই মতে জেএসসি/জেডিসি কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। এখন গর্জনিয়ার জেডিসি পরীক্ষার্থীরা কচ্ছপিয়ায় এবং কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি শিক্ষার্থীরা গর্জনিয়ায় পরীক্ষা দিচ্ছে। আগামীতে এসএসসি এবং দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্রও একই কায়দায় স্থাপন হওয়া উচিত। এই প্রশ্নে বাম আর ডান টানা মূর্খের পরিচয় বহন করে।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও গর্জনিয়া ইউপির পাঁচ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী বলেন-১৯৬৩ সালে এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন আশপাশের ২৫ কোলোমিটার এলাকাজুড়ে কোন স্কুল ছিলো না। কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় মাত্র ১৯৮৯ সালে। গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সঙ্গে রামুর জন্মজাত দক্ষিণ চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান, সাবেক রাষ্ট্রদূত প্রয়াত আলহাজ্ব ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরীর স্মৃতি জড়িয়ে আছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের শিক্ষক প্রতিনিধি সুকুমার বড়–য়া বলেন-কচ্ছপিয়ার নুরুল আমিন কোম্পানিও গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। তাঁরা অহেতুক বাড়াবাড়ি করছে। এ নিয়ে গর্জনিয়া ও কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের সচেতন মহলের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। গর্জনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে ক্ষোভের নিরসন জরুরী। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ, এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের একান্ত সুদৃষ্টি কামনা করছি।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারসহ পাঁচ জেলায় পদযাত্রায় নামছে এনসিপি, হামলার শঙ্কা

চট্টগ্রামসহ পাঁচ জেলায় পদযাত্রা নামছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আগামীকাল শনিবার (১৯ জুলাই) কক্সবাজারে পদযাত্রার ...

মিয়ানমারের চোরাই ১১টি মহিষ ১১লাখ ৫০হাজার টাকায় নিলামে বিক্রয়

মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে চোরাইপথে পাচারকালে কক্সবাজার উখিয়ার সীমান্ত পয়েন্ট থেকে ৬৪ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ...